নিজস্ব প্রতিনিধি: টেকনাফ উপজেলায় জলাতঙ্ক নির্মূূলে কুকুরের টিকাদান কর্মসূচি আজ সোমবার সমাপ্ত হয়েছে। কর্মসূচিতে বেওয়ারিশ কুকুর ছাড়াও অসংখ্য পোষা কুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিরোধক টিকা প্রদান করা হয়। মরণব্যাধি জলাতঙ্ক রোগ হতে সকলকে মুক্ত করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের উদ্যোগে, টেকনাফ উপজেলা পরিষদ, টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে সহযোগিতায় ২৩ মার্চ হতে শুরু হওয়া ৫ দিনব্যাপী কর্মসূচিতে টেকনাফ পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ড ও উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ৫১২৫ টি কুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিরোধক টিকা প্রদান করা হয়েছে।
কর্মসূচির সফলতা সর্ম্পকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাগন বলেন, অত্যন্ত উৎসব মুখর পরিবেশে কক্সবাজার জেলা স্বাস্থ্য ও প্রাণি সম্পদ বিভাগের প্রত্যক্ষ সহায়তায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা হতে আগত এমডিভি এক্সপার্ট, সুপারভাইজার ও ফিল্ড সুপারভাইজারবৃন্দের প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে স্থানীয় ডগ ক্যাচার ও দক্ষ ডগ ক্যাচার, ভ্যাকসিনেটর, ডাটা কালেক্টর এবং ইউনিয়ন সুপারভাইজারদের শতভাগ আন্তরিকতায় সমগ্র টেকনাফ উপজেলায় জলাতঙ্ক প্রতিরোধে ব্যাপকহারে কুকুরের টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে সমগ্র উপজেলাবাসীর সার্বিক সহায়তা পাওয়ায় কর্মসূচি সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে।
কুকুরকে টিকাদান কর্মসূচি সর্ম্পকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের এমডিভি সুপারভাইজার হাসান সাইয়েদুল মুরসালিন তারিফ বলেন, সমগ্র টেকনাফ উপজেলায় ব্যাপকহারে কুকুরকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় উপজেলায় অবস্থিত সকল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কুকুরকে টিকাপ্রদান করা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশে সবোর্চ্ছ কুকুর বহুল ইউনিয়ন সেন্টমার্টিনের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কুকুরকে টিকা প্রদান করা হয়। সেন্টমার্টিন ইউনিয়নে ছয় দিনে প্রায় ১৯১৭টি কুকুরকে টিকা প্রদান করা হয়। আশাকরি সেন্টমার্টিন প্রায় ৭০ ভাগের অধিক কুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিরোধক টিকা দেয়া হয়। পর্যটন নির্ভর সেন্টমার্টিনে জনসংখ্যার তুলনায় অনেক অনেক কুকুর, যা দ্বীপের জনগনের সহ পযর্টকদের বিরক্তের কারণ। তাই সকলকে জলাতঙ্ক রোগ হতে বিপদমুক্ত রাখার অভিপ্রায়ে সেন্টমার্টিন সহ সমগ্র উপজেলায় ব্যাপকহারে কুকুরকে টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়।
সেন্টমার্টিনের অধিক কুকুরের সংখ্যা সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের এমডিভি এক্সপার্ট ডা. এম. মুজিবুর রহমান বলেন, সেন্টমার্টিন পর্যটন এলাকা হওয়ায় রেস্টুরেন্টের মাধ্যমে কুকুরের খাবারের উৎস বেশি এবং দ্বীপে তেমন যানবাহন না থাকায় কুকুরকের সংখ্যাও অন্যান্য স্থানের মত কমে না। তাই সেন্টমার্টিনে কুকুরের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। আশাকরি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় সেন্টমার্টিনে সঠিক পদ্ধতির মাধ্যমে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের এমডিভি এক্সপার্ট ডা. মোঃ কামরুল ইসলাম কর্মসূচির সফলতা সর্ম্পকে বলেন, উপজেলার সকলের আন্তরিক সহযোগিতার কারণে কুকুরকে টিকাদান কর্মসূচি সফলভাবে শেষ করা সম্ভব হয়েছে। আর কুকুরকে জলাতঙ্ক টিকা দেয়ার ফলে উপজেলাবাসীর নিকট কুকুর আর বিরক্তির কারণ হবে না। এ কর্মসূচির ফলে টেকনাফ উপজেলার জনসাধারণ জলাতঙ্ক রোগ হতে শঙ্কা মুক্ত থাকবেন বলে এই আশা ব্যক্ত করেন সকলে। পাশাপাশি অনেকেই এই কর্মসূচির বেশ প্রশংসা করেন। অমানবিকভাবে কুকুর নিধনের চেয়ে জলাতঙ্ক প্রতিরোধক টিকাদানের মাধ্যমে কুকুরকে জলাতঙ্ক মুক্ত রাখা হলে কুকুর আমাদের সমস্যার কারণ হবে না।