নিউজ ডেস্ক: সত্তর দশকের আমেরিকার দাপুটে কবি অ্যালেন গিনসবার্গ। পূর্বসূরি কবিদের লেখা কবিতার ধরন ও প্রথা ভেঙে তিনি লিখতে শুরু করলেন নতুন এক ধরনের কবিতা। লিরিক অর্থাৎ ছন্দ বিবর্জিত সেসব কবিতাকে শ্লেষ মিশেল কণ্ঠে তার নিন্দুকরা বলত ‘অশ্লীল গদ্য কবিতা’। গিনসবার্গ তার অনেক কবিতায় আমেরিকা ও সেখানকার শাসকদের প্রচণ্ড রকম নিন্দা-মন্দ করতেন। সেটা তার কবিতা না পড়লে কেউ সহজে বুঝতে পারবে না। সে যাই হোক একবার এক কবিতা পাঠের আসরে একজন শ্রোতা মাঝপথে উঠে দাঁড়িয়ে ঝাঁঝালো গলায় গিনসবার্গকে প্রশ্ন করল-‘এই যে মান্যবর কবি আমাদের আসলে একটু বুঝিয়ে বলুন তো আপনার এসব আবর্জনা তুল্য কবিতার মানে কী?’ গিনসবার্গ বিশ্বাস করতেন সশস্ত্র বিপ্লবীদের মতো শিল্পী-সাহিত্যিকরাও যদি প্রথা ভাঙতে চায় তবে তাদেরও হতে হবে উগ্রপন্থি’। গিনসবার্গ সেই শ্রোতার প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়েই জামা-পাতলুন-জাঙ্গিয়া খুলে ফেলে নিজের অনাবৃত নিুাঙ্গের দিকে ইঙ্গিত করে সহাস্যে বলেছিলেন আমার কবিতার মানে হলো-‘এই’।
অ্যালেন গিনসবার্গের প্রসঙ্গটি এখানে এলো এ কারণে যে, ১৯৭১ সালে গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী আমেরিকার সরকার যখন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ওপর পাকিস্তানি শাসকদের ব্যভিচার দেখেও তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল সে সময় আমেরিকার সরকারের সব নীতি উপেক্ষা করে সে দেশের বুদ্ধিজীবী, শিল্পী ও জনসাধারণ পাকিস্তানি অত্যাচারের প্রতিবাদ করেছে। বব ডিলান, জন বায়েজ, জর্জ হ্যারিসনের মতো সে সময়ের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পীরা ভারতে বাংলাদেশি শরণার্থীদের জন্য যত বেশি সম্ভব সাহায্য পাঠানো যায় সে বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে গঠিত হলো একটি কমিটি। তারা অ্যালেন গিনসবার্গকে পাঠাল কলকাতায় সরেজমিন সব কিছু প্রত্যক্ষ করে একটি রিপোর্ট তৈরি করতে। যাতে করে সে অনুযায়ী সাহায্য পাঠানো যায়। অ্যালেন গিনসবার্গ একজন আলোকচিত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ছুটলেন যশোর রোড ধরে। তখন ছিল ঘোর বর্ষাকাল। ঝড়-জল উপেক্ষা করে কখনো হাঁটুজল ভেঙে কিংবা কখনো নৌকায় করে তিনি চষে বেড়িয়েছিলেন এক শরণার্থী শিবির থেকে অন্য কোনো শিবিরে। আমেরিকায় ফিরে গিয়ে গিনসবার্গ শরণার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহে প্রচুর উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি লিখেছিলেন তার বিখ্যাত কবিতা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’। গিনসবার্গ পাকিস্তানি জুলুম, অত্যাচারের বিরুদ্ধেও প্রবল জনমত গড়ে তুলেছিলেন আমেরিকায়।
বর্তমানে কারও কারও মুখে যখন শুনি ‘অল্প গণতন্ত্র বেশি উন্নয়ন’ তখন মনে হয় যেন তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ইয়াহিয়া খানের কণ্ঠেরই অবিকল প্রতিধ্বনি। যিনি বলেছিলেন পূর্ব পাকিস্তানকে তিনি উন্নয়নের জোয়ারে ভাসাবেন। এসব বক্তব্যে বাংলাদেশের মানুষের মন তিনি ভোলাতে পারেননি। বাংলাদেশকে উন্নয়নের জোয়ারে তিনি না ভাসাতে পারলেও ২৫ মার্চ রাতে বর্বরোচিত নারকীয় কায়দায় এ জনপদকে রক্তের সাগরে ভাসিয়েছিলেন। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই দেশ শাসন করবেন বলে সকাল-বিকাল ওয়াজ-নসিয়ত করেন ভাবতেই অবাক লাগে তারা কী করে ভুলে যান যে মুক্তিযুদ্ধের প্রধানতম কারণ ছিল গণতন্ত্রের অপলাপ। ১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজয়ী হয়। কিন্তু সে বিজয় মেনে নেয়নি সে সময়ের পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। এমন কী জুলফিকার আলি ভুট্টোর মতো পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যারিস্টার রাজনৈতিক নেতাও এ নির্বাচনকে মেনে নিতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যদি পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মেনে নিত তাহলে তো আর যুদ্ধের প্রয়োজনই হতো না।
একটি প্রশ্ন আমার মনের মধ্যে প্রায়ই উঁকিঝুঁকি মারে-বর্তমান সরকারের পর যদি কোনো দল ক্ষমতায় আসে এবং সেই সরকারও যদি এই সরকারের মতো আমাদের মগজ ধোলাই করতে শুরু করে দেয় যে-‘অল্প গণতন্ত্র বেশি উন্নয়ন’ আমরা যারা নিজেদের সচেতন নাগরিক হিসাবে ভাবি তারা তো অবশ্যই এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব কিন্তু আওয়ামী লীগ তখন কী বলবে? কিংবা আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরা যারা এখন নিয়মিত বিভিন্ন টকশোতে ‘অল্প গণতন্ত্র বেশি উন্নয়ন’ এই স্লোগানটির পক্ষে একটির পর একটি শানিত যুক্তি দিয়ে নিজেদের কণ্ঠের দম ফুরিয়ে ফেলছেন তারা তখন কী বলবেন? মাঝে মাঝে আমার ভবিষ্যতের সেই চিত্রটি একবার বেশ দেখতে ইচ্ছা করে। একটি বিষয় আমাদের মগজে যেন কিছুতেই ঢুকতে চায় না যে- গণতন্ত্র ছাড়া একটি দেশে সুশাসন, মানবাধিকার, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, বাকস্বাধীনতা এসব বিষয় কিছুতেই প্রতিষ্ঠিত করা যায় না। সেটা ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, যেই থাকুক না কেন। কেন? এর উত্তর লুকিয়ে আছে আব্রাহাম লিংকনের সেই মহান উক্তিটির মধ্যে-Absolute Power corrupted absoluteLy. অর্থাৎ ‘কারও হাতে অধিকতর ক্ষমতা আরও বেশি অধিকতর মন্দভাবে জনমানুষের ওপর প্রয়োগকৃত হয়।’ এ জন্যই হিটলার, মুসোলিনি, পিনোশে, ফ্রাঙ্কোর মতো মানুষ যুগে যুগে ইতিহাসের পাতায় খলনায়ক হিসাবে চিত্রিত হয়ে আছেন। কারণ তাদের দেশের সাধারণ জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহি ছিল না।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের মতে গণতন্ত্র হচ্ছে ‘আলোচনাভিত্তিক শাসন’-এই দর্শনটি বর্তমানে প্রাশ্চাত্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং গণতন্ত্রকামী উন্নত দেশগুলোতে এ ধারণাটি আজকাল বেশ ভালোভাবেই অনুসৃত হচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, রিজভী আহমেদের মতো নিপাট সৎ ব্যক্তিরা মাসের পর মাস জেল-জুলুম খাটছেন। প্রত্যেক জনের মাথার ওপর ঝুলছে শতাধিক করে মামলা। আমাদের দেশে আলোচনাভিত্তিক শাসন তো অনেক দূরের কথা বিরোধী মতকে ধরে ধরে সব গারদে পোরা হচ্ছে। অমর্ত্য সেন তিনি তার বিখ্যাত ‘নীতি ও ন্যায্যতা’ বইটিতে গণতন্ত্র ও ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রদান শব্দ দুটি সমার্থক শব্দ হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। শুধু অমর্ত্য সেনই নন, আরেক বিখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী স্যামুয়েল হান্টিংটন যেমন বলেছেন-‘অবাধ, মুক্ত এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন গণতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত’। আর ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদান হচ্ছে এ গণতন্ত্রেরই একটি অপরিহার্য অঙ্গ। পরবর্তী দিনগুলোতে রাজনৈতিক দর্শনে গণতন্ত্রের ধারণার অনেক পরিবর্তন হলেও এখনো অনেকে গণতন্ত্রের ইতিহাসকে এর সাংগঠনিক রূপ, অর্থাৎ ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচনের সঙ্গে অভিন্ন হিসাবেই দেখেন। অর্মত্য সেন, তার বইটিতে আরও লিখেছেন-ভোট অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ; প্রকাশ্য যুক্তি প্রয়োগকে কার্যকর করতে গেলেও ব্যালটের প্রয়োজন আছে। কিন্তু এটা বুঝতে হবে যে, খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটা একটা অংশ মাত্র। এটাই সব নয়। প্রকৃতপক্ষে ব্যালট তখনই কার্যকর ভূমিকা নেয় যখন বাক-স্বাধীনতা, জানার অধিকার এবং বিশেষত, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকে।
অমর্ত্য সেন সমকালীন উদাহরণ হিসাবে যদিও কোরিয়ার ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্রের কথা বলেছেন কিন্তু এ মুহূর্তে আমার আরও দুজন সরকার প্রধানের নাম মনে পড়ছে যারা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হলেও সত্যিকার অর্থে তারা তাদের দেশগুলোতে গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে ডেমোক্রেটিক অথরিটারিয়ানিজম অর্থাৎ কর্তৃত্ববাদী সরকার প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, তাদের মধ্যে প্রথম জন জার্মানির হিটলার আর দ্বিতীয় জন ছিলেন ডোমেনিকান রিপাবলিকের রাফায়েল ত্রোহিও। হিটলারের কুকর্ম সম্পর্কে আমরা কম বেশি সবাই অবগত আছি। শুধু এতটুকুই বলব বিরোধী মত নিশ্চিহ্ন করার জন্য এহেন কোনো কাজ নেই যে তিনি করেননি। অনেকে মনে করেন হিটলার তার দেশের বিরোধী দলকে দমন করার জন্য তাদের পার্লামেন্ট ‘রাইখস্টাগ’ আগুনে ভস্মীভূত করে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপিয়েছিলেন, যাতে করে তাদের আচ্ছাভাবে শায়েস্তা করা যায়।
রাফায়েল ত্রোহিও ক্ষমতায় এসেছিলেন প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে ১৯৩৮ সালে। এরপর তিনি আর ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াননি। ত্রোহিও বলপূর্বক ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখেন ১৯৬১ সাল অর্থাৎ আততায়ীর হাতে নিহত হওয়ার দিন পর্যন্ত! ক্ষমতা নিজ হাতে ধরে রাখার জন্য এমন কোনো কাজ নেই যে ত্রোহিও করতে রাজি ছিলেন না। উৎকোচ কিংবা ভয়ভীতি দেখিয়ে গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করা। বিরোধীদলীয় লোকজনকে হত্যা, গুম, জুলুম, কারাবাস কিছুই তিনি বাদ দেননি। মানবাধিকার বিষয়ে আমেরিকার কিছু সিনেটর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে ত্রোহিও তাদেরও শত শত একর আখের ক্ষেত উৎকোচ হিসাবে লিখে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার একটাই কথা-যে কোনো মূল্যে আমাকে ক্ষমতায় থাকতে হবে। হিটলার, মুসোলিনি, ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কো, পিনোশে, রাফায়েল ত্রোহিও এদের প্রত্যেকের মধ্যে একটি সাযুজ্য বেশ প্রণিধানযোগ্য-যে কোনো মূল্যে বিরোধী দল-মতো সব নিঃশেষ করে দাও। ফ্রাঙ্কো ১৯৩৬ সালে ক্ষমতায় এসে স্পেনে সব বিরোধী দল নিষিদ্ধ করে দিলেন।
হিটলার মুসোলিনিও একই কাজ করেছিলেন। মুসোলিনি ১৯২২ সালে ক্ষমতায় এসে তৈরি করলেন ‘ন্যাশনাল ফ্যাসিস্ট পার্টি’ দমন, পীড়ন চলল তার বিরোধীদের ওপর-বাদ গেলেন না লেখক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরাও। বিখ্যাত মার্কসবাদী লেখক এন্টিনিও গ্রামসিকেও নিক্ষেপ করা হলো কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। প্রহসনমূলক বিচারে সরকারপক্ষীয় আইনজীবী বললেন-‘আগামী ২০ বছর গ্রামসির মস্তিষ্ক ও চিন্তাশক্তি যাতে কাজ করতে না পারে আমাদের সে ব্যবস্থা করতে হবে।’ চিলির স্বৈরশাসক অগাস্ত পিনোশে তার বিরোধী মতের কত লোক যে হত্যা ও গুম করেছিলেন তার কোনো হিসাব-নিকাশ নেই। কেউ বলেন তিনি ১০ হাজার মানুষ হত্যা ও গুম করেছিলেন। ৩০ হাজার মানুষকে কারাগারে ঢুকিয়েছিলেন। দুই লক্ষ্যের অধিক নির্বাসনে পাঠিয়েছিলেন-কিন্তু কেউ কেউ বলেন পিনোশের হাতে অত্যাচারিত মানুষের সংখ্যা আরও অধিক। পাবলো নেরুদা চিলির নোবেল বিজয়ী কবি। তিনি নোবেল পান ১৯৭১ সালে। অগাস্ত পিনোশে ক্যু করে ক্ষমতায় আসেন ১৯৭৩ সালে। পিনোশের ক্ষমতায় আসীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মিলিটারি হানা দেয় নেরুদার বাড়িতে। নেরুদা মিলিটারিদের উদ্দেশ করে বলেছিলেন-চারদিকে তাকিয়ে দেখ এখানে তোমাদের জন্য একটিই বিপজ্জনক জিনিস রয়েছে আর সেটা হচ্ছে কবিতা। নেরুদার মৃত্যু ঘটে সে বছরই। পিনোশে সিদ্ধান্ত নেন যে, নেরুদার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে অতি সংগোপনে কিন্তু সেদিন চিলির রাস্তায় মানুষের ঢল নামে। কবির শেষ যাত্রা পরিণত হয় অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে পদযাত্রায়। ক্রোধান্ধ পিনোশে কবির বাড়িঘর, কাগজ, বইপত্র সব কিছুই পুড়িয়ে দেন।
তাদের সময়ে এসব অত্যাচারী স্বৈরাচার মানুষগুলো ক্ষমতার দাপটে এতটাই অন্ধ ছিলেন যে, তারা নিশ্চয়ই ভাবতেন-সময় তাদের জন্য স্থির। তারা সারা জীবন মানুষের ওপর অত্যাচার করে যেতে পারবেন। কিন্তু রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে আজ তারা কেউই জীবিত নেই। তারা নেই কিন্তু তারপরও তারা রয়ে গেছেন তিক্ততায়, ঘৃণায়, জুলুমবাজ, অত্যাচারী, হত্যাকারী হিসাবে মানুষের মনে ও ইতিহাসের পাতায়।
লেখক : কথাসাহ্যিতিক, কলামিস্ট ও আইনজীবী
সূত্র: যুগান্তর