দুটি লঞ্চের মাস্টারের বয়স ৭০ এবং ৬৫

100

নিউজ ডেস্ক: কোনো মাস্টার কিংবা চালকের বয়স ৫৮ বছর পার হলে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া লঞ্চ বা জাহাজ চালাতে পারবেন না। আর বয়স ৬৫ বছর হলে চালক হিসেবে অনুমতিও দেওয়া যাবে না।  অথচ বুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ মর্নিং বার্ডের মাস্টারের বয়স ৭০ বছর। আর ধাক্কা দেওয়া এমভি ময়ূর-২–এর মাস্টারের বয়স ৬৫ বছর।

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মুখ্য পরিদর্শক শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, লঞ্চ বা জাহাজের মাস্টার ও চালকের বয়স যখন ৫৮ বছর পূর্ণ হবে, তখন তাঁকে লঞ্চ চালাতে হলে অবশ্যই নৌপরিবহন অধিদপ্তরের অনুমোদন নিতে হবে।

সিভিল সার্জনের দেওয়া স্বাস্থ্যগত ফিটনেস সনদ, চক্ষু পরীক্ষাসহ সব পরীক্ষা-নিরীক্ষায় পাস করলেই কেবল ওই ব্যক্তির লঞ্চ চালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বয়স ৬৫ বছরের বেশি হলে অধিদপ্তরের বিধি অনুযায়ী কাউকে লঞ্চ চালানোর অনুমতি দেওয়াই যাবে না।

গত সোমবার সকাল আটটার দিকে মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে মর্নিং বার্ড নামের একটি লঞ্চ ঢাকার সদরঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। লঞ্চটি টার্মিনালের কাছাকাছি এলে এমভি ময়ূর-২ নামের একটি লঞ্চ মর্নিং বার্ডকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে মর্নিং বার্ড ডুবে যায়।

এতে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারা গেছেন মর্নিং বার্ডের মাস্টার আমির আলীও। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী, তাঁর বয়স এখন ৭০। ১৯৫০ সালের ১০ মে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি দোহারের বানাঘাটা গ্রামে।

অন্যদিকে লঞ্চডুবির জন্য দায়ী ময়ূর-২ লঞ্চের প্রধান মাস্টার হলেন আবুল বাশার মোল্লা। মামলার কাগজপত্র অনুযায়ী, তাঁর বয়স ৬৫। তাঁর গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলার কলাগাছি গ্রামে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক প্রথম আলোকে বলেন, বয়স পেরিয়ে গেলেও কীভাবে লঞ্চ চালাচ্ছিলেন, তিনি তা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখবেন। এ জন্য দায়ী বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবেন।

৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক কোনো ব্যক্তি লঞ্চ চালাতে পারবেন না বলে জানান নৌপরিবহন অধিদপ্তরের চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন কে এম জসিমউদ্দিন সরকার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অধিক বয়সে লঞ্চ চালানো সম্পূর্ণ বেআইনি। এসব বিষয় দেখভাল করার দায়িত্ব নৌ–পুলিশের, বিআইডব্লিউটিএর এবং নৌপরিবহন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের।’