নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর কেন্দ্রবিন্দু কারওয়ান বাজার সংলগ্ন রেললাইন দীর্ঘ দিন ধরে মাদকের চিহ্নিত স্পট। রেললাইন ধরে হাঁটলেই ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের কাছে থেকে শোনা যায়, ’ভাই লাগব। কী লাগব কন। গোডা (ইয়াবা) আছে। যত চান আইন্যা দেওন যাইব। পাতা (গাঁজা) আছে।’ মাঝে মাঝে অভিযানের পর বন্ধ থাকে কারবার। ফের শুরু হয় প্রকাশ্যে বিকিকিনি।
করোনা পরিস্থিতিতে পুলিশের নজর এড়িয়ে কারওয়ান বাজার রেললাইন ঘিরে রমরমা হয়ে উঠছিল মাদকের কারবার। এর নেতৃত্বে ছিলেন মাদক সম্রাজ্ঞী শারমিন ওরফে স্বপ্না (২২)। রেললাইন ঘিরে তার রাজত্ব। কারওয়ান বাজার রেললাইন এলাকায় তাকে ‘ছোট সম্রাজ্ঞী’ বলে ডাকা হয়। তার মাথার ওপর রয়েছে আরেক মাদক সম্রাজ্ঞীর ছায়া। দু’জনে চালাচ্ছিলেন ওই সাম্রাজ্য। বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে বিশাল এলাকাজুুড়ে দীর্ঘ দিন ধরেই তাদের রাজত্ব।
স্বপ্না একাধিকবার গ্রেপ্তারও হয়। জামিনে ছাড়া পেয়ে এসে আবার জড়ান একই পেশায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার মধ্যরাত পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযানে কারওয়ান বাজার রেললাইন এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্বপ্না ও তার মাদক সিন্ডিকেটের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশের একটি দল। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রেললাইনকেন্দ্রিক মাদকের বড় সম্রাজ্ঞীকেও খোঁজা হচ্ছে। যার কাছ থেকে পাইকারি দরে মাদক কিনে স্বপ্না তার লোকজনের মাধ্যমে বিক্রি করে আসছিল।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি আলী হোসেন বলেন, রেললাইন ঘিরে মাদক কারবারিরা করোনার এই সময়টাকে মাদক কারবার প্রসারের জন্য বড় ছক কষছিল। ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইন ও ফেনসিডিল তারা মজুদ করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরো কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। তারা পলাতক।
পুলিশ সূত্র জানায়, শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশের একটি দল তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড ও রেললাইন বস্তি এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। অভিযানে গ্রেপ্তার হয় মাদক কারবারি স্বপ্না, নুপুর, জাহিদা, ময়না, শিউলী, লিপি, রুবেল, খলিল, রুমু, মোহাম্মদ রুবেল, খোরশেদ আলম পনির, রাজু পাটোয়ারী। তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।