নিউজ ডেস্ক: আমের রাজধানী খ্যাত উত্তরের শেষ সীমান্ত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এখন প্রতিদিনই রাজশাহী হয়ে রাজধানী ঢাকায় চলে যাচ্ছে নানান জাত ও নামের সুমিষ্ট রসালো সব আম।
১৪টি স্টোপেজ দিয়ে প্রথমবারের মত এই রুটে চলাচলকারী ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’ তাই আশাজাগানিয়া সাফল্য পেয়েছে বলেই মনে করছেন- পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এটি রেলওয়ের পণ্য পরিবহনের ইতিহাসে নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে বলেও দাবি সংশ্লিষ্টদের। তাই রেলপথে আম পরিবহনের এই সেবাকে নিরবচ্ছিন্ন রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। ফলে এই অল্প সময়েই স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীদের কাছে আম পরিবহনে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে ‘ম্যাংগো স্পেশাল’ ট্রেন।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বুকিং শাখা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর তিনসপ্তাহ অতিবাহিত করতে যাচ্ছে রাজশাহীর ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’। চাঁপাইনবাগঞ্জ-রাজশাহী-ঢাকা রুটের এই ট্রেনটিতে আম ছাড়াও কৃষিজাত পণ্য ও অন্যান্য মালামালও পরিবহন করা যাচ্ছে। চালুর পর থেকে ‘ম্যাংগো স্পেশাল’ নামের বিশেষ এই ট্রেন সার্ভিসে চাষি ও ব্যবসায়ীদের আম পরিবহনে আগ্রহ বাড়ছে।
শুক্রবার (২৬ জুন) এই বিশেষ ট্রেন তার চলাচলের তিন সপ্তাহ পূর্ণ করেছে। এই তিন সপ্তাহে ঢাকায় আম গেছে মোট ৫ লাখ ১০ হাজার ৪০৬ কেজি। এর মধ্যে প্রথম সপ্তাহে ট্রেনটি আম পরিবহন করে ১ লাখ ১০ হাজার ৫৩৭ কেজি। দ্বিতীয় সপ্তাহে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৮১ কেজি। এছাড়া তৃতীয় সপ্তাহে ২ লাখ ২৫ হাজার ১৮৮ কেজি আম পরিবহন করেছে। গত ৫ জুন এই ট্রেনটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছিল।
‘ম্যাংগো স্পেশাল’ ট্রেনটিতে বর্তমানে রাজশাহী স্টেশন থেকে এক কেজি আম ঢাকার বিমানবন্দর, তেজগাঁও বা কমলাপুরে নিতে খরচ পড়ছে সর্বোচ্চ ১ টাকা ১৮ পয়সা। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এক কেজি আমের ভাড়া লাগছে ১ টাকা ৩১ পয়সা।
গত ৫ জুন প্রথমবারের মতো বিশেষ এই ট্রেন চালুর পর অনেকেই বিষয়টি জানতেন না। তবে নামমাত্র মূল্যে আম পরিবহনের বিষয়টি সবার মধ্যে জানাজানি হওয়ার পর ব্যাপক সাড়া পড়ে গেছে। ঝামেলা মুক্তভাবে সম্পূর্ণ নিরাপদে আম পরিবহনের জন্য তাই ‘ম্যাংগো স্পেশাল’ ট্রেনটি এর মধ্যে রাজশাহী অঞ্চলের আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মৌসুম শুরু আগেই আম সংগ্রহ, পরিবহন ও বাজারজাত নিয়ে গত ২০ মে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সভা হয়। ওই সভায় আম পরিবহনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী হয়ে রাজধানী ঢাকা অভিমুখে একটি বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে করোনাকালীন পরিস্থিতিতে রাজশাহীর আম, লিচু ও অন্যান্য মৌসুমি ফল বিপণন এবং কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ যেন কোনো অবস্থাতেই বাধগ্রস্ত না হয় বিষয়ে করণীয় নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।