নিউজ ডেস্ক: ১৯৯৪ সালে কেনা বিভিন্ন সামগ্রীর জন্য উত্তর কোরিয়ার কাছে এখনো ১১.৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওনা আছে বাংলাদেশের। কিন্তু কিম জং উন প্রশাসন সে টাকা পরিশোধের কোনো নামগন্ধও নিচ্ছেন না বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকা।
গতকাল ২৭ জুন, শনিবার পত্রিকাটিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৪ সালে কেনা বিভিন্ন সামগ্রীর জন্য উত্তর কোরিয়ার কাছে ১১.৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বকেয়া পাওনা আছে বাংলাদেশের। পাওনা টাকা আদায়ে চীনের বেইজিংস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস উত্তর কোরিয়ার দূতাবাসের সাথে কয়েকবার যোগাযোগ করলেও তারা কোন সাড়া দেয়নি।
সোনালী ব্যাংকের সাথে বার্টার চুক্তির আওতায় ২৬ বছর আগে এসব পণ্য আমদানি করে উত্তর কোরিয়া। এসব পণ্যের জন্য কমপক্ষে ১১.৬২ মিলিয়ন ডলার ঋণী তারা। বার্টার ৫ চুক্তির আওতায় দেশটি বাংলাদেশ থেকে ৬.১৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য কিনে। তবে তা কেনার সময় কোনো মূল্য পরিশোধ করেনি তারা। বার্টার ৫ এর পুরো বকেয়াগুলি বার্টার ৬-এ স্থানান্তরিত হয়েছিল, যা ১৯৯৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর স্ট্যান্ডিং ৬.২৬ মিলিয়ন ডলারে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
১৯৯৫ সালের ৩১ মার্চ কোনো লেনদেন ছাড়াই শেষ হয় বার্টার ৬ চুক্তির মেয়াদ। এরপর থেকে বেইজিংয়ের বাংলাদেশি দূতাবাস চীনে থাকা উত্তর কোরীয় দূতাবাসের কাছে বাকি বকেয়া পরিশোধের জন্য কয়েকবার যোগাযোগ করেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পায়নি। এখন পর্যন্ত কোনো উত্তরও দেয় নি বহির্বিশ্বের অধিকাংশের দেশে সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দেশটি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এখন বিলটি সুরক্ষিত করার জন্য সরকারি মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল ইন্সটিটিউশন ডিভিশন (এফআইডি) এর যথাযথ হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমান প্রধান শনিবার পত্রিকাটিকে বলেন, ‘এটি অনেক পুরানো ঘটনা। এই মুহূর্তে আমি সঠিকভাবে এই তথ্যটি স্মরণ করতে পারছি না।’
তবে সোনালী ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য সূত্রের বরাতে সংবাদে জানানো হয়, বাংলাদেশ ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ১৯৭৭ সালের ১২ আগস্ট প্রথম বার্টার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এ চুক্তির আওতায় সোনালী ব্যাংককে বাংলাদেশের পক্ষে এবং বিদেশি বাণিজ্য ব্যাংককে উত্তর কোরিয়ার পক্ষে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। এরপর ১৯৯৪ সালে বার্টার ৬ এর স্বাক্ষরের পরে উভয় ব্যাংকই স্ব স্ব দেশগুলির পক্ষে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এই আন্তঃব্যাংক চুক্তিতে তিন মাসের ডলার এলআইবিওর হারে সুদ আদায়ের বিধান অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এফআইডিকে প্রেরিত চিঠিতে আতাউর রহমান প্রধান লিখেন, বারবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর কোরিয়ার ফরেন ট্রেড ব্যাংক সোনালী ব্যাংককে ৩০ জুন, ২০১২ তারিখে একটি সুইফট বার্তার মাধ্যমে ১০.০৪ মিলিয়ন ডলার বকেয়া নিশ্চিত করেছে। উত্তর কোরিয়ার ব্যাঙ্ককে বারবার বকেয়া পরিশোধ করতে বলা হলেও, তারা আদৌ সেটি পরিশোধ করছে না চিঠিতে তাও যোগ করা হয়েছিল।