নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীকে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের (২০৪১ সালের মধ্যে) উন্নত দেশের উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
পুলিশের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পরিবর্তনের মাধ্যমে এই পরিবর্তন আনার কথা বলেছেন তিনি। শনিবার (২৭ জুন) দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা আঞ্চলিক পুলিশ লাইন্সের নবনির্মিত ব্যারাক ভবন উদ্বোধনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ‘উন্নত দেশের পুলিশ হতে হলে পুলিশের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে। পুলিশকে মাদকমুক্ত হতে হবে। পুলিশে থেকে মানুষের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নেওয়া যাবে না। মানুষের প্রতি নিষ্ঠুরতা নয়, মানবিক আচরণ করতে হবে। জনগণের সেবায় নিয়োজিত পুলিশ অফিসার ও ফোর্সের সার্বিক কল্যাণও নিশ্চিত করা হবে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, আবুল খায়ের গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আবু সাঈদ চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, অতিরিক্ত আইজিগণসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি পুলিশকে মাদকমুক্ত রাখার বিষয়ে বলেন, ‘কোনও ব্যক্তি ক্যান্সার আক্রান্ত হলে আক্রান্ত অংশ কেটে অপসারণ করা হয়। পুলিশের কোনও সদস্য যদি ড্রাগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত থাকে তাহলে নির্দয়ভাবে তাকেও বাংলাদেশ পুলিশ থেকে অপসারণ করা হবে। এ ব্যাপারে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। তখন পুলিশ এ ভাইরাস প্রতিরোধে সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অপেক্ষা না করে জনগণের সুরক্ষায় কাজ শুরু করে। এখন পুলিশের ২ লাখ সদস্যের প্রত্যেকের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী রয়েছে।’
করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘আমরা মাত্র দুই সপ্তাহে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে ২৫০ বেড থেকে ৫০০ বেডের কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করেছি। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় একটি উন্নত বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করা হয়েছে, স্কুল-কলেজ এবং হোটেল ভাড়া করে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য যেখানে চার সপ্তাহের কম সময়ে পিসিআর মেশিন স্থাপন করা যায় না, সেখানে মাত্র ১২ দিনে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতলে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে বিভাগীয় হাসপাতালগুলোকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এর ফলে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং মৃত্যুর হার কমছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে জাতীয় পর্যায়ে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩ ভাগ। পুলিশে মৃত্যুর হার মাত্র দশমিক ৫ ভাগ।’
আইজিপি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন করে করোনা চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে সেরা বলে আখ্যায়িত করেছেন। চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলও করোনা চিকিৎসায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসা প্রটোকল ও ব্যবস্থাপনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।’