করোনা পজিটিভ হয়েও দলবলসহ অভিযান: সেই ওসিকে প্রত্যাহার

49

নিউজ ডেস্ক: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সামাদ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েও দলবল নিয়ে অভিযানে যান। একটি হত্যা মামলার আসামিকে সঙ্গে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধারে পুলিশ ফোর্সসহ অভিযানে যাওয়ায় তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার স্থলে থানায় নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, ওসি আব্দুস সামাদ জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত হয়ে ৯ জুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে গিয়ে পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। পরে ১৫ জুন উনার করোনা পজিটিভ আসে। তাকে থানা ভবনের নিজ কক্ষে আইসোলেশনে থাকতে বলা হয়। কিন্তু ১৭ জুন বুধবার মাদ্রাসাছাত্র আবুল বাশার ওরফে সাইমুন হত্যা মামলার প্রধান আসামি মীর হোসেন ঢাকার কদমতলী থানার মোহাম্মদবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশের একটি দল।

পরে থানার ওসি আবদুস সামাদ আইসোলেশন থেকে বের হয়ে ওই আসামিকে নিয়ে পৌরসভার আলোকপাড়া এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে যান। এ সময় ওসিসহ অন্য পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় আসামি ছাড়াও একাধিক পুলিশ সদস্য ওসির সংস্পর্শে আসেন।

তবে এ ঘটনা যতটা না তার পেশাদারিত্বের প্রশংসা হয়েছে তারচেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠেছে করোনা আক্রান্ত একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি আইন অমান্য করায়। বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে আসলে তাকে জেলা কোভিড-১৯ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ওসি আবদুস সামাদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি নোয়াখালী কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার স্থলে মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে নতুন ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

সোনাইমুড়ী থানার নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, তিনি পুলিশ সুপার এর আদেশে থানায় যোগ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৯ জুন মঙ্গলবার বিকালে আলোকপাড়া গ্রামের বিলে সিদ্দিক উল্যা হাজি বাড়ি ও আশরাফ আলী বেপারী বাড়ির ছেলেদের মধ্যে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া ও কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর সিদ্দিক উল্যা হাজি বাড়ির সাইমুন ও তার ভাই শিমুল মাগরিবের নামাজের পড়ে বাজারের দিকে যাওয়ার সময়, আশরাফ আলী বেপারী বাড়ির মীর হোসেনসহ তার সহযোগীরা ধারালো ছুরি দিয়ে তাদের দুই ভাইকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এসময় তাদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে, অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক সাইমুনকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর থেকে মীর হোসেন পলাতক ছিল।