নিউজ ডেস্ক: পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ২৩ ভারতী সেনা নিহত হওয়ার পর শত শত সামরিক গাড়ি মোতায়েন করেছে চীন। সীমান্তে ওই সংঘর্ষের আগেই গোলাবারুদ ও সেনাবোঝাই এসব গাড়ি লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল সীমানার কাছে গালওয়ান নদী উপত্যকায় আনা হয়। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এসব গাড়ি মোতায়েনের দৃশ্য ধরা পড়ে।
সংঘর্ষের আগে ও পরে পুরো উপত্যকার সব ছবি প্লানেট ল্যাবের স্যাটেলাইট ইমেজে ধরা পড়েছে। ১৬ জুন, মঙ্গলবার সংঘর্ষস্থলের স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করা হয়। ওই ছবিতে দেখা যায়, ভারতের গালওয়ান নদী উপত্যকা বরাবর সারি বদ্ধভাবে চীনা সেনাবাহিনীর (পিএলএ) বেশ কয়েকটি সামরিক ট্রাক মোতায়েন করা।
এর আগে ১৫ জুন, সোমবার রাতে গালওয়ান ভেলিতেই দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ভারতের ২৩ জওয়ান নিহত হন। এ বিষয়ে চীন কোনো মন্তব্য না করলেও ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, এই সংঘর্ষে চীনের অন্তত ৪৫ জন সেনা নিহত বা আহত হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, সংঘর্ষের আগে অন্তত ২০০ সশস্ত্র গাড়ি মোতায়েন করা হয়। এছাড়া বেশ কয়েকটি সেনা তাঁবুও টানানো হয়। সংঘর্ষের পরও উপত্যকা থেকে এগুলো সরানো হয়নি।
এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়, লাদাখে প্যাংগং লেকের ২০০ কিলোমিটার দূরে তিব্বতের ‘গাড়ি কুনসা’য় দশ বছর আগেই একটি বিমানবন্দর বানিয়েছে চীন। তখন বেইজিং বলেছিল, অসামরিক বিমান পরিবহণের জন্যই ওই বিমানবন্দর তৈরি করা হচ্ছে।
কিন্তু উপগ্রহে ধরা পড়া চিত্র মতে, গত এক মাসে ওই বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের কাজ রাতারাতি বেড়ে গেছে। সেখানে রীতিমতো একটি বিমানঘাঁটি তথা এয়ারবেস বানিয়ে ফেলেছে চীন। এছাড়াও সেখানে যুদ্ধবিমানও দাঁড় করিয়ে রেখেছে চীনের বিমানবাহিনী।
প্রসঙ্গত, গালওয়ান নদী বা গালওয়ান নদী উপত্যকা চীনের সীমানা রেখার পশ্চিমে ও আকসাই চীনের ভারতীয় অংশে অবস্থিত। ১৯৬০ সালে এ উপত্যকার পশ্চিম সীমা শায়ক নদী উপত্যকা সংলগ্ন পার্বত অঞ্চল পর্যন্ত দাবি করেছিল চীন। ফলে ১৯৬২ সালে দুই দেশের মধ্যে অচলাবস্থা। এর কয়েকমাস পরেই ভারত ও চীনের যুদ্ধ বেধে যায়।
আকসাই চীন এলাকা থেকে লাদাখ ঘিরে বয়ে চলা প্রাচীন গালওয়ান নদী ভারত ও চীনের চলমান সংঘাতের প্রধান কারণ। বর্তমানে ভূ-রাজনীতির ক্ষেত্রে এ উপত্যকাটি দুই দেশের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।