নিউজ ডেস্ক: একটু বিশ্রাম পেলাম যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী চিকিৎসক ডাঃ ফেরদৌস খন্দকার বাংলাদেশে এসেছেন দেশের মানুষের চিকিৎসা সেবা প্রদানের পাশাপাশি কল্যানময় কিছু কাজ করতে। যেহেতু তিনি যুক্তরাষ্ট্র হতে বাংলাদেশে এসেছেন, তাই ডাঃ ফেরদৌসকে নিয়ম অনুসারে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোরেন্টিনে থাকতে হচ্ছে। আর কোরেন্টিনে থেকেই আজ তিনি তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। যা নিচে পাঠকদের জন্য হুবাহু তুলে ধরা হলো।
আমার জীবনটাকে বরাবরই একটা নিয়মের মধ্যে পরিচালিত করেছি আমি। এক জীবনে কখনোই নিয়মের বাইরে যাইনি। তবে সবসময়ই কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। পরিশ্রমকে ভয় পাইনি। পড়াশোনার প্রতি আমার ভালোলাগা সবসময়ের। সেই সাথে সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত রেখেছি। ছাত্র অবস্থায় যেমন, কর্মজীবনেও তাই। হিসাব করে দেখেছি, দিনে ৬ থেকে ৭ ঘন্টার বেশি ঘুম আমার কখনোই হয়নি। কাজ কাজ আর কাজ। এই বয়সেও নিয়মিত নানা বিষয়ে পড়াশোনা, চিকিৎসা পেশা; সেই সাথে মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
সাধারণত খুব সকালে ঘুম থেকে উঠি আমি। নিয়মিত জিম করি। এরপর ব্যস্ততম এক একটি দিন শুরু হয়। দিনভর কাজে ক্লান্তি ভর করে। বিশ্রামের সময় খুব কমই পেয়েছি। এরপর যখন করোনার সময় এলো, তখন পরিস্থিতি আরও বদলে গেলো। এমনও দিন গেছে; যেখানে ১৮ ঘন্টার মতো কাজ করতে হয়েছে। এমনো হয়েছে; ঘুম কি জিনিস, সেটাই যেনো ভুলে গিয়েছিলাম। জীবনকে তুচ্ছজ্ঞান করেছি মানুষের জন্যে কাজ করার প্রয়াস থেকে। সবসময়ই মনে হোত; মানুষের জন্যে যদি আর একটু বেশি কিছু করতে পারতাম! এই তৃষ্ণা যেনো মেটে না। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে; ভালোবাসা নিয়ে বলেছি; “আমি আছি”। নিজের সাধ্য অনুযায়ী যতটা পেরেছি করেছি।
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করতে আসার পর; নিয়ম মেনেই আমাকে কোরেন্টিনে রাখা হয়েছে। আমিও নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই কোরেন্টিনের দিনগুলো কাটিয়ে দিচ্ছি। মনে হচ্ছে, অবশেষে বোধ হয় একটু বিশ্রামের সুযোগ পেলাম। এখানে খুব ভালো দিন কাটছে আমার। আশপাশে থাকা মানুষগুলো অসাধারণ। তাদের মমতা আমাকে মুগ্ধ করছে। দিনে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা ঘুমাচ্ছি। বন্ধুদের সাথে ডিজিটাল আড্ডা হচ্ছে। প্রচুর পড়াশোনা করছি। খাওয়া দাওয়া; সবকিছু ঠিকঠাক আছে। মনে হচ্ছে; কখনো এমন কোন উপলক্ষ্য আসে; যেটা হয়তো প্রয়োজন। এই বিশ্রামের সময়টাকে তাই আশির্বাদ বলেই ধরে নিয়েছি। ভবিষ্যত সুস্থ্যতার জন্যে এই বিশ্রামটুকু প্রয়োজন ছিল। ভয় শুধু একটাই-ওজন যদি বেড়ে যায়! আমি ভালো আছি। আপনারা সবাই ভালো থাকুন। নিরাপদে থাকুন।