নীলফামারী প্রতিনিধি: ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে মরণ ব্যাধি জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলে “জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসুচি” বাস্তবায়নে ব্যাপক হারে কুকুরের টিকাদান (এমডিভি) কর্মসুচি পালন উপলক্ষে নীলফামারীতে অবহিতকরণ সভা হয়েছে। রোববার দুপুরে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে ওই সভা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিভিল সার্জন রনজিৎ কুমার বর্মন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রন শাখার (সিডিসি) পরিচালনায় ওই অবহিতকরণ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রন শাখার সিডিসি কনসালটেণ্ট চিকিৎসক রাশেদ আলী শাহ, সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মো. রাশেদুল হোসেন প্রমুখ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে জুম অ্যাপের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা হতে জলাতঙ্ক রোগ ও কুকুরের টিকাদান কর্মসুচি নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক শাহনীলা ফেরদৌসী, সাবেক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জুনোটিক ডিডিজ প্রোগ্রামের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ উম্মে রুমান সিদ্দিকী।
আয়োজকরা জানায় আগামী ১৮ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত জেলার ৬ উপজেলায় ব্যাপক হারে কুকুরের টিকাদান কর্মসুচি পরিচালিত হবে। এর আগে জেলায় দুই রাউন্ড টিকাদান সম্পন্ন করা হয়েছে। এটি জেলার তৃতীয় রাউন্ড।
বক্তারা বলেন, জলাতঙ্ক একটি ভয়ংকর মরণব্যাধি, এ রোগে মৃত্যুর হার শতভাগ। পৃথিবীতে কোথাও না কোথাও প্রতি ৯ মিনিটে একজন এবং প্রতিবছর প্রায় ৫৭ হাজার মানুষ জলাতঙ্ক রোগে মারা যান। জলাতঙ্ক সাধারণত কুকুরের কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে ছড়ায়।
এছাড়া বিড়াল, শিয়াল, বেজী, বানরের কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে এ রোগ হতে পারে। ২০১৬ সালের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনা এবং ২০২২ সালের মধ্যে দেশকে জলাতঙ্ক মুক্ত করার লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে এ কর্মসুচি শুরু করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় এবং প্রাণি সম্পদ মন্ত্রনালয় যৌথভাবে জাতীয় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রন এবং নির্মুল কর্মসুচি বাস্তবায়নে কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের সকল জেলায় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এসব কেন্দ্র থেকে কুকুর বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত রোগীর আধুনিক ব্যবস্থাপনা ও জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা বিনা মুল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে।
এই কর্মসুচির সুপারভাইজার মো. আসাদুজ্জামান প্রধান বলেন, ‘আগামী ১৮ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত জেলার ৬ উপজেলায় ৩৩ হাজার কুকুরের শরীরে এক ডোজ করে টিকা প্রদান করা হবে। এর আগে জেলায় দুই রাউন্ড এই টিকা প্রদান করা হয়েছে।’
সিভিল সার্জন রনজিৎ কুমার বর্মন বলেন, “এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগীর সংখ্যা পুর্বের তুলনায় ৬০ ভাগ হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে চলমান এ সকল কার্যক্রমের পাশাপাশি কুকুরের কামড়ের আধুনিক ব্যাবস্থাপনা চালু রেখে ব্যাপক হারে কুকুরের টিকাদান কর্মসুচির মাধ্যমে দেশের সকল কুকুরকে ৩ রাউন্ড টিকা প্রদান করা গেলে ইস্পিত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে।”