এখানে গুণী হয়ে জন্মানো মানে দহন: আফজাল হোসেন

39

নিউজ ডেস্ক: প্রখ্যাত অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদীর জন্মদিন আজ। ১৯৫২ সালের এই দিনে ঢাকার নারিন্দায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র- তিন মাধ্যমেই ছিল তার সমান পদচারণা। ২০১২ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি মারা যান বিরলপ্রজ এ অভিনেতা। প্রখ্যাত এ অভিনেতার সঙ্গে দারুণ বন্ধুত্ব ছিল অভিনেতা, পরিচালক, চিত্রশিল্পী ও বিজ্ঞাপন নির্মাতা আফজাল হোসেনের। মূলত বন্ধু আফজাল হোসেনের সাহস ও উৎসাহেই টিভি নাটকের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন হুমায়ুন ফরিদী। বন্ধুর জন্মদিনে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন আফজাল হোসেন। পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো তা-

কেমন ছিল মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ফরীদির জীবন? অধিকাংশ মানুষ ঠোঁট গোল করে চুক চুক শব্দে দীর্ঘশ্বাস ফেলবে। তারপর বহুজন অবশ্যই ব্যক্তিজীবন কাটা ছেঁড়ায় বসে যাবে। তার শেষ এক যুগের অভিনয় জীবন কেমন ছিল- কেউ কি ভেবে দেখেছে?

শিল্পী ও তার কলাকে আমরা সমীহ করি, সম্মন করি। কিন্তু বিচার করবার সময় শিল্পী অস্তিত্বকে করি অস্বীকার। সর্বদা তাকে বিচার করা হয় মানুষ হিসাবে।

শিল্পী একজন মানুষই তবে তার সংবেদনশীলতা অন্যের চেয়ে প্রখর। সবারই জগতের ভিতরে তার থাকে একান্ত নিজস্ব এক জগৎ। অন্যেরা কেবল তাকে উপর থেকে দেখে বিচার করতে পারে। অদেখা থেকে যায় ভিতরটা।

অভিনয়ে ফরীদি যে অসাধারণত্বের প্রমাণ দেখাতে পেরেছিলেন তার প্রায় সবই কুড়ি বছর আগের। অর্থাৎ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একটা লম্বা সময় তাকে কেবল খেয়ে পরে বেঁচে থাকার জন্যই অধিকাংশ অভিনয় করে যেতে হয়েছে। আত্মা থেকেছে অতৃপ্ত।

অভিনয় ছাড়া জীবনে আর কিছুই করতে চায়নি বলে নানা অপ্রিয়, অসুন্দরকে মানতে হয়েছে। তা অশেষ মর্মবেদনার, নিত্য পুড়ে ছাই হওয়া। প্রতিদিন প্রবল অসহায়বোধে ভুগতে হলে, তা ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়ার মতই।

এখানে গুণী হয়ে জন্মানো মানে দহন ও পীড়নের জীবন। তবু তেমন মানুষ জন্মায় বলে গৌরবের অস্তিত্ব জীবনে আছে- টের পাওয়া হয়। শুভ জন্মদিন বন্ধু।